প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২০, মঙ্গলবার
ডা. আসির মোসাদ্দেক সাকিব
ডেন্টাল সার্জন,
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ।
মেয়েরা যখন মায়ের পেটে তৈরী হয়, তখন মেয়েদের দেহের সব অংশই তাদের মায়ের কোষ বিশ্লেষিত হয়ে হয়। গর্ভস্থ মেয়ের ডিম্বাশয় ও ডিম্বাণু গুলোও মায়ের দেহের উপাদান দিয়ে তৈরী। জন্মের সময় মেয়েরা ৬০/৭০ লক্ষ ডিম্বাণু নিয়ে ভূমিষ্ট হয়। বয়ঃসন্ধির আগ-পর্যন্ত তাদের শরীর এগুলোর ভেতরে যাচাই-বাছাই করে ৩ লক্ষ টা ডিম্বাণু ঠিক রেখে বাকি সব নষ্ট করে দেয়। এই ৩ লক্ষের ভেতরে প্রতি মাসে একটি করে পরিপক্ক হয়, যার কারণে পিরিয়ড বা মাসিক হয়, এটা সবাই জানে।
কিন্তু বায়োলজিস্টরা একটা কথা আরো গুরুত্ত্বের সাথে বলে। কোন মেয়ের সন্তানটি যে ডিম্বাণু আর শুক্রাণুর কম্বিনেশনে হল, সেখানে ডিম্বাণুটি কিন্তু মায়ের দেহে এসেছে নানীর দেহের উপাদানে তৈরী হয়ে। কারন ডিম্বাণু গুলো মায়ের দেহে এসেছে, মা যখন নানীর পেটে ছিল তখন। তাই আমরা আমাদের নানীর সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। যদিও জন্মকষ্টটি পাবে মা, তবু বায়োলজিক্যালি আমাদের দেহ গঠনে মায়ের যেমন ভূমিকা, নানীরও তার সমান ভূমিকা।
কিন্তু বাবার দিকে দেখলে কেবল বাবারই ভূমিকা। কারণ ছেলেদের শুক্রাণু গুলো দাদীর পেটে তৈরী হয়ে আসেনা, এগুলো ১০/১১ বছর বয়সের দিকে ছেলের দেহে সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরী হয়।
ডিস্কভার ম্যাগাজিনে ‘Trait Or Fate’ নামের আর্টিক্যালে নিউরো বায়োলজিস্টরা এপিজেনেটিক্স হিসাব মতে বলেন, এই কারণে নানী আমাদের ক্রোমোজোমে একটি জেনেটিক ইমপ্রিন্ট বা ছাপ রেখে যায়। অনেক সময় নানীর কিছু গোপন স্বভাব বা মুড বা শুচিবায়ু আমরা অদ্ভূতভাবে পেয়ে যাই। মেয়েদের মুড সুইং অনেক ক্ষেত্রে জৈব-রাসায়নিক উপাদানের হের-ফেরের কারণে হলেও ছেলেদের কিছু মুড সুইং নানীর থেকে পাওয়া বলে এরা ধারণা করেন।