প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৪ অগাস্ট ২০২০, সোমবার
স্মৃতি বড় মধুর। সময়ের সাথে হারিয়ে যাওয়া মুহূর্তকে বাক্সবন্দি করতে তোলা হয় এক একটি ছবি। আমরা প্রায়ই বলে থাকি, একটি ছবি অনেক কথার সমান। শুধু কথাই না, একটি ছবি অনেকগুলো স্মৃতির সাক্ষী। এই স্মৃতিগুলো কখনও হাসায়, কখনও কাঁদায়; আবার মনে করিয়ে দেয় পুরানো কিছু গুরুত্বপূর্ণ অর্জন। তেমনই এক স্মৃতি নিয়ে আমাদের আজকের প্রতিবেদন। সময়টা আজ থেকে ৩৮ বছর আগের, কিন্তু ক্যামেরা বন্দি হয়ে আজও স্মৃতিতে অমলিন তাঁদের কৃতিত্ব। উনিশ শতকের ছবিটি এই বিশ শতকের যোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা।
ছবিটি ১৯৮২ সালের, বাংলাদেশের তৎকালীন আট মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে তোলা হয় এই স্থিরচিত্র। ধারণা করা হয়, সে সময় প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় প্রথম হওয়া আটজন ছাত্র এবং ছাত্রীকে নিয়ে এই ছবিটি তোলা হয়েছিল। বাংলাদেশে ১৯৮২ সালে আটটি মেডিকেল কলেজ ছিল; ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, সিলেট মেডিকেল কলেজ, শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ ও রংপুর মেডিকেল কলেজ।
১৪-২২ ডিসেম্বর ১৯৮২ সালে, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত উচ্চ পদস্থ অনেক ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে সরকারী পৃষ্টপোষকতায় নিপসম, মহাখালী ঢাকায় “প্রাইমারী হেলথ কেয়ার”-এর উপর সপ্তাহব্যাপী একটি ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠিত হয়। ওয়ার্কশপে প্রতিটি মেডিকেল কলেজের প্রিক্লিনিক্যাল স্টুডেন্টদের মাঝে প্রথম প্রফেশনাল পরীক্ষায় প্রথম হওয়া ছাত্র এবং ছাত্রীদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। আটটি মেডিকেল কলেজ থেকে এমবিবিএস অধ্যয়নরত একই ব্যাচের চার জন ছেলে এবং চার জন মেয়ে এই ওয়ার্কসপে অংশগ্রহণ করেন।
ছবিতে উপস্থিত সকল চিকিৎসক বর্তমানে দেশে-বিদেশে উচ্চ পর্যায়ে কর্মরত আছেন। নবীন চিকিৎসকদের অনুপ্রেরণা এই ছবির মহারথীরা।
ছবিতে উপবিষ্ট (বাম দিক থেকে)-
ছবিতে প্রথমে যিনি আছেন, তিনি শের- ই বাংলা মেডিকেল কলেজ এর শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর “পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি”।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে প্রফেসর ডা. শাহানা চৌধুরী। তিনি অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান (অবস এন্ড গাইনী) হিসেবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত আছেন।
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ থেকে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. ইফতাত আরা। কর্মরত বিভাগীয় প্রধান (অবস এন্ড গাইনী), সিএমএইচ।
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ এর প্রফেসর ডা. সোহেলি রহমান, অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফিজিক্যাল মেডিসিন এন্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগে।
ছবিতে দণ্ডায়মান (বাম দিক থেকে)-
ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে ডা. মাহবুবুর রহমান, বর্তমানে আমেরিকায় গবেষক হিসেবে কর্মরত আছেন।
ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ থেকে ডা. নূরী(পুরো নাম জানা যায়নি) তিনি বর্তমানে কোথায় কর্মরত আছেন সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তাঁদের ব্যাচে প্রথম হয়েছিলেন প্রয়াত অধ্যাপক ডা. মনসুর খলিল। কিন্তু মমেক থেকে ডা. নূরী প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। কারণ জানা যায়নি।
রংপুর মেডিকেল কলেজ থেকে আছেন প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ শামসুজ্জামান, অধ্যক্ষ রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ।
সর্বশেষে সিলেট মেডিকেল কলেজ থেকে যে কীর্তিমান ছাত্র ছিলেন, তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এটি একটি স্মৃতিবিজড়িত স্থিরচিত্র। উনিশ শতকের এই কীর্তিমান চিকিৎসকরা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা।