ছবিতে যাকে দেখছেন তিনি পাবনা জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাশ করে ভর্তি হন ঢাকা কলেজে। এরপর ভর্তি হন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে।
সময়টা ১৯৫৫ সাল, তখন বাংলাদেশ ছিল পূর্ব পাকিস্তান। পশ্চিমের বড় ভাইয়েরা পূর্বের বাঙ্গালদের মানুষই মনে করে না, সফট কর্নার তো দূরের কথা। এসব বিষদৃষ্টি দমিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টাকে মধ্যমা দেখিয়ে MBBS ডিগ্রিতে সমগ্র পাকিস্তানে প্রথম হয়ে স্বর্নপদক জিতে নিলেন তিনি।
ডাক্তারিবিদ্যায় উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডন যান। সেখানেও একইরকম আরেকটা অঘটন ঘটে!
মাত্র ৩০ বছর বয়সে MRCP ডিগ্রি সম্পন্ন করেন, শুধু একটা না, মেডিসিন ও কার্ডিওলজি দুই বিষয়ে দুইটা, যেটা কিনা লন্ডনের রয়েল কলেজের ইতিহাসে রেকর্ড।
ব্রিলিয়ান্ট লোকেরা একটু বোকা কিসিমের হয়, তিনিও বোকামি করে দেশে চলে আসলেন।
অঘটনের শেষ হয়নি এখনো- ৩৬ বছর বয়সে মেডিক্যালের প্রফেসর হন, যা আজ অব্দি মেডিক্যাল ইতিহাসে রূপকথা।
পিচ্চি প্রফেসরের আলোড়ন সৃষ্টিকারী লেখাগুলো লন্ডনের মেডিক্যাল জার্নালে নিয়মিত প্রকাশ হত।
১৯৭০ সালে ৩৮ বছর বয়সে “পাকিস্তান সেরা প্রফেসর এওয়ার্ড” এ মনোনীত হন। পাকিস্তানের শোষনের প্রতিবাদে সে পুরষ্কার গ্রহনে অস্বীকৃতি জানান তিনি।
১৫ ডিসেম্বর আলবদরের সহায়তায় পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে যায় তাঁকে। ১৮ ডিসেম্বর এই চিকিৎসাচার্য্যের খোজ মেলে রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে – গলিত, পচা, চোখ দুইটা উপরানো অবস্থায়।
বলছিলাম ডা. ফজলে রাব্বির কথা, যার নামে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হলের নামকরণ।
আত্নসমর্পনের ঠিক আগ মুহুর্তে এমন এমন মানুষগুলোকেই বাছাই করে হত্যা করে পাকিস্তানিরা। সহায়তা করে আলবদর।
আঘাতটা কত গুরুতর অনুমান করতে পারেন?
ক্ষতির পরিমানটা কতটুকু বুঝতে পেরেছেন?
কেন আমরা উনাদের হারানোর শোকে বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করি বুঝেছেন হয়ত।
তথ্যঃ Oscar Shuvo
হামিদুল ইসলাম
TMMC, 03-04