বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে (শেবাচিম) ভবন ধসের ঝুঁকির মুখে পড়েছেন আবাসিক ছাত্রীরা।
আবাসন সংকট সমাধানে নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু হলে এ ঝুঁকিতে পড়েছেন তারা।
শিক্ষার্থীরা জানায়, ছাত্রীদের আবাসিক সমস্যা সমাধানে পুরাতন ভবনের পাশেই সম্প্রতি নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
নতুন ভবন নির্মাণের জন্য শুরু হয়েছে পাইলিংয়ের কাজ। বড় বড় পিলার মাটির নিচে ঢোকানোর সময় সৃষ্টি হচ্ছে প্রচণ্ড কম্পন।
এতে করে যেকোন সময় ধসে পড়তে পারে ছাত্রীনিবাসের পুরানো ভবনটি। তাই ভবন ধসের আশঙ্কায় আতংকিত ছাত্রীনিবাসের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
ছাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য গণপূর্ত বিভাগকে চিঠি দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. রণজিৎ চন্দ্র খাঁ জানান, মেডিকেল কলেজের একমাত্র ছাত্রীনিবাসে ৪৮০ সিটের বিপরীতে প্রায় ৭০০ শিক্ষার্থী অবস্থান করছেন।
ছাত্রীদের আবাসন সংকট নিরসনে অনেক আগে থেকেই কলেজের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে চিঠি আদান-প্রদানের পর অবশেষে গত সপ্তাহে চার তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের পাইলিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে।
তবে, নির্মাণ কাজের শুরুতেই দেখা দিয়েছে বিপত্তি। রিগ মেশিনের মাধ্যমে মাটির নিচে পাইল ড্রাইভের সময় কম্পন সৃষ্টি হচ্ছে পাশের পুরানো ভবনটিতে। আর এ কারনে ছাত্রীরা আতঙ্কিত।
বিষয়টি ছাত্রীরা তাকে প্রথমে মৌখিক এবং পরে লিখিতভাবে জানিয়েছে বলে জানান অধ্যক্ষ।
অধ্যক্ষ আরো বলেন, ছাত্রীদের জন্য নতুন ভবনের প্রয়োজন রয়েছে। পাশাপশি তাদের জীবনের নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে। তাই গণপূর্ত বিভাগকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
মাটির নিচে পাইল ড্রাইভের মাধ্যমে পিলার স্থাপনে ঝুঁকি থাকলে, সে ক্ষেত্রে মাটি খনন করে পিলার নির্মাণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ছাত্রীনিবাসের বাসিন্দা শাম্মী আক্তার জানান, কয়েক দিন আগে হঠাৎ করে পুরো ভবনটি কেঁপে ওঠে। ভূমিকম্প হয়েছে ভেবে সবাই রুম থেকে বেড়িয়ে আসে। কিন্তু পরে জানতে পারেন পুরানো ভবনের পিছনে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য পিলার বসানো হচ্ছে, যার কারণেই ভবনটি কাঁপছে।
রিজু অভিযোগ করে বলেন, নতুন ভবন নির্মাণের জন্য যেসকল শ্রমিক কাজ করছেন তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে হোস্টেল কম্পাউন্ডে। দিনরাত তারা আসা যাওয়া করছেন। এতে ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
নির্মাণ শ্রমিক রাজু ও সোহেল জানান, প্রতিটি পিলার ৫৭ ফুট লম্বা। দুটি পিলার ড্রাইভ করা হয়েছে। পিলারগুলো ড্রাইভের সময় পাশের ভবনটি কেঁপে ওঠে।
এখনো শতাধিক পিলার ড্রাইভ করতে হবে। ভবনটি পুরানো হওয়ায় এটি ধসে পড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান শ্রমিকরা।
এ ব্যাপারে গণপূর্ত বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাইফুজ্জামান জানান, ছাত্রীনিবাসের নির্মাণাধীন নতুন ভবনটি ৮ তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট। তবে প্রাথমিকভাবে ৪ তলা সম্পন্ন করা হবে।
ছাত্রীদের অভিযোগের বিষয়ে সাইফুজ্জামান বলেন, পাইল ড্রাইভের সময় আশেপাশের ভবনে কম্পন হবে। এটা স্বাভাবিক। স্থান পরিদর্শন করে কলেজ অধ্যক্ষকে পরবর্তী পরামর্শ দেওয়া হবে।
সেক্ষেত্রে ছাত্রীদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া বা তাদেরকে কিছুদিনের জন্য ছুটিতে পাঠানো যেতে পারে বলে জানান উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো. সাইফুজ্জামান।