আজকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবার তুলকালাম কান্ড ঘটেছে। খবরঃ বাচ্চা এক রোগী মেনিনজাইটিস (মস্তিষ্ক ঝিল্লিতে প্রদাহ) অথবা এনকেফালাইটিস (মস্তিষ্কে প্রদাহ) নিয়ে ভর্তি হয়েছিল পেডিয়াট্রিক ওয়ার্ডে। এমনিতেই মেনিনজাইটিস বা এনকেফালিটিস ভয়াবহ রোগ; এদের মর্টালিটি প্রায় ৩০-৩৫ ভাগ; অর্থাৎ ১০০ তে ৩০ থেকে ৩৫ জন বাচ্চা মারা যায় চিকিৎসা পাবার পরেও। তো গতকাল ভর্তি হওয়া বাচ্চাটা আজকে সকালে মারা যায়। বাচ্চা মাররা যাবার পর থেকে রোগীর গার্জিয়ান অভিযোগ করে ইনজেকশন দেয়ার পর বাচ্চা মারা যায়। যেই ইনজেকশন দেয়া হয়েছিল তার নাম সেফট্রায়াক্সোন। এইটা দেয়ার কারনে রোগী মারা যাবার কোন কারণ নেই। এইটা দেয়ার কারনে যদি রোগী মারা যায় তাহলে বাংলাদেশ মানুষ শূন্য হয়ে যাবে। এত কমন ব্যবহৃত এন্টিবায়োটিক এইটা।রোগীর লোকের পরিচিত ৫০/৬০ জন লোক এসে হাসপাতালে তান্ডব বইয়ে দেয়; ওয়ার্ড ভাংচুর করে; ডাক্তারদের আটকে রাখে। আর বাকি রোগীর লোকজন কোথায় এদের থামাবে বান ঠান্ডা করার চেষ্টা করবে। তা না তারাও তাদের সাথে গলা মেলানো শুরু করে। এই হাসপাতালে ডাক্তার থাকে না; ৮ টা বেজে গেলো আমার রোগীকে এখনো ডাক্তার দেখে নাই; এই না সেই না। ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক বিভাগে ভুল চিকিৎসায় নাকি বাচ্চা মারা গেছে, সাংবাদিকদের এমন উস্কানির জের ধরে এলাকার ও রোগীর লোকজনের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরে তারা পুলিশের উপস্থিতিতেই কর্মবিরতিতে থাকা ও কালো ব্যাচ ধারনকারী ডা:দের মানববন্ধনে হামলা চালায় এবং ভাংচুর করে, আহত হয় অনেকেই। এমতাবস্থায় ময়মনসিংহ বিএমএ সভাপতি ডা: রফিক স্যার ও সাধারন সম্পাদক ডা:মতিউর রহমান ভূইয়া হাসপাতালের সকল বিভাগ বন্ধের ঘোষনা দিয়েছন হামলাকারিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত। তারপরেও ক্রিটিকাল রোগির কথা বিবেচনা করে ইমার্জেন্সী খোলা রাখতে বলেছেন। মমেকহা-এ অবস্থানরত ডা:, ছাত্র ছাত্রী সবাইকে ডা:দের বিরুদ্ধে এই আচরনের প্রতিবাদের আন্দোলনে সামিল হবার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে, সাথে সকল মেডিকেলে একযোগে আন্দোলনের জন্য বিনীত অনুরোধ করা হচ্ছে।
মমেকহা’র দ্বিতীয়, তৃতীয় শ্রেনীর কর্মকর্তারাও এই আন্দোলনের সাথে একাত্ত্বতা ঘোষনা করেছে।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দোষী ব্যক্তি গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত ইমার্জেন্সি ছাড়া হাসপাতালের সব চিকিৎসা সেবা দেয়া বন্ধ থাকবে। কিন্তু স্যাররা যদি প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ না করে তাহলে এই সিদ্ধান্ত কতটুকু ফলপ্রসু হবে তাও দেখার বিষয়। আসলে হাসপাতালে ধর্মঘট না ডাকার পক্ষে আমরা সর্বদাই, কারণ- হাসপাতালে ধর্মঘট ডাকলে সাধারণ গরীব রোগীদের ভোগান্তি হয়। কিন্তু, আজ আমরা এমন ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হচ্ছি।
খুব খারাপ লাগছে, অশনি সংকেত!