মার্কিন তরুণদের ধূমপানের হার গত ২৫ বছরে সবচেয়ে কম

মঙ্গলবার, ২২অক্টোবর, ২০২৪

মার্কিন তরুণদের মধ্যে ধূমপানের হার গত ২৫ বছরে সবচেয়ে কমেছে। গত ১৭ অক্টোবর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত ‘ন্যাশনাল ইয়ুথ টোবাকো সার্ভে’ (এনওয়াইটিএস) ও ‘টোবাকো-ফ্রি চাইল্ড’ এর ওয়েবসাইটে এই জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।

সমীক্ষায় থেকে দেখা যায়, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যুব সমাজের ধূমপানের হার সামগ্রিকভাবে ১.৪ শতাংশে নেমে এসেছে। ১৯৯৯ সালে জরিপটি আরম্ভ হওয়ার পর থেকে গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন হার এটি। ধূমপানের হার উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১.৭ শতাংশ এবং মধ্যম বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১.১ শতাংশে নেমে এসেছে৷ জরিপে দেখা যায়, তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার করা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর পরিমাণ ১০.১শতাংশে নেমে এসেছে। যা ২০২৩ সালে ১২.৬ শতাংশ ছিল।

ই-সিগারেটের ব্যবহার ১০ শতাংশ থেকে ৭.৮শতাংশে নেমে এসেছে। তবে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিকোটিন পাউচের ব্যবহার ১.৭ শতাংশ থেকে বেড়ে ২.৪ শতাংশ হয়েছে। একমাত্র নিকোটিন পাউচের ব্যবহার অল্প পরিমাণ বাড়লেও বাকি তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের নিম্নমুখী লেখচিত্র বেশ আশানুরূপ।

‘টোবাকো-ফ্রি চাইল্ড’ প্রচারাভিযানের সভাপতি ও সিইও ইয়োলোন্ডা সি. রিচার্ডসন জরিপ নিয়ে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলেছেন, “এটি একটি চমৎকার খবর যে তরুণদের ধূমপানের হার এবং সামগ্রিক তামাক ব্যবহার গত ২৫ বছরের মধ্যে সর্বনিম্নে নেমে এসেছে। এটি জনস্বাস্থ্যে সাফল্যের অসাধারণ গল্প যা আগামী প্রজন্মের জীবন বাঁচাতে ভূমিকা রাখবে। এই ফলাফল প্রমাণ করে যে, সঠিক নীতি, সামঞ্জস্যপূর্ণ জনসচেতনতা এবং প্রচারণার মাধ্যমে, আমরা যুবকদের মধ্যে সমস্ত তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমানোর পাশাপাশি, শেষ পর্যন্ত সমূলে উপড়ে ফেলতে পারব। এ সমীক্ষার দীর্ঘমেয়াদী নথি অনুযায়ী, ২০০০ সালে উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধূমপানের হার ছিল ৩৪.৫ শতাংশ। যা ধীরে ধীরে কমতে আরম্ভ করেছে। এই সমীক্ষা স্পষ্টভাবে দেখায় যে আমরা যুবকদের কোন ধরনের পুনর্অভ্যাস ছাড়াই ই-সিগারেটসহ সকল তামাকের ব্যবহার কমাতে পারি৷”

তিনি আরো উল্লেখ করেন, “অনস্বীকার্য অগ্রগতি সত্ত্বেও, ২.২৫ মিলিয়ন যুবক এখনও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার অব্যাহত রেখেছে এবং ই-সিগারেট ব্যবহার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি গুরুতর ‘জনস্বাস্থ্য সমস্যা’ হিসাবে বহাল আছে। আমেরিকান-ভারতীয় এবং আলাস্কা নেটিভ যুবকদের মতো নির্দিষ্ট ধরনের উপ-জনসংখ্যার মধ্যে তামাকের ব্যবহার অনেক বেশি। আমাদের পর্যাপ্ত প্রহরা সত্ত্বেও, তামাক শিল্প যুবকেদের আকৃষ্ট ও আসক্ত করার নতুন উপায় খুঁজে বের করতে থাকবে এবং ১.৬ মিলিয়নেরও বেশি শিশু এখনও ই-সিগারেট ব্যবহার করে এবং ৪২ শতাংশের কাছাকাছি উচ্চ বিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা এখনও উচ্চ-নিকোটিন পণ্যে আসক্ত। বাজারে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে ই-সিগারেটে নিকোটিনের মাত্রা আকাশচুম্বী হয়েছে, এবং সাম্প্রতিক পণ্যগুলিতে ২০ প্যাকের সিগারেট বা তার বেশি পরিমাণ নিকোটিন বিদ্যমান, যা তাদেরকে দ্রুত এবং গুরুতর আসক্তির ঝুঁকিতে ফেলেছে।”

তিনি বিবৃতির শেষাংশে বলেন, “তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার কমাতে, রাষ্ট্র ও স্থানীয় কর্মকর্তাদের উচ্চ তামাক কর(ভ্যাট), ধূমপানমুক্ত আইন, পর্যাপ্ত বাজেট এবং প্রচুর জনসচেতনতামূলক প্রচারাভিযান কর্মসূচির মতো প্রমাণিত কৌশলগুলোর বাস্তবায়ন করা উচিত। FDA, বিচার বিভাগ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক ফেডারেল এজেন্সিগুলিকে অবশ্যই সমস্ত অবৈধ ই-সিগারেটমুক্ত বাজার তৈরির জন্য তাদের প্রচেষ্টা জোরদার করতে হবে৷ এখন পর্যন্ত, FDA শুধুমাত্র 34টি ই-সিগারেট পণ্য বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে, কিন্তু হাজার হাজার অবৈধ, অননুমোদিত পণ্য এখনো বাজারে রয়ে গেছে। যদিও  জরিপ দেখায় যে আমরা প্রায় প্রতিটি বিভাগে যুবকদের তামাকের ব্যবহার কমানোর ক্ষেত্রে অসাধারণ অগ্রগতি করেছি, কিন্তু নিকোটিনের পাউচের ব্যবহার বেড়েছে- এটি বেশ বিব্রতকর। জেইনের মতো নিকোটিন পাউচ বিক্রি দ্রুত বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও যুবকদের মাঝে এই পণ্যগুলির ব্যবহার তুলনামূলকভাবে কম। নিকোটিন পাউচ ব্যবহারকারী যুবকদের মোট সংখ্যা ২০২১ সালে ২০০,০০০ থেকে বেড়ে ২০২৪ সালে ৪৮০,০০০ হয়েছে।”

প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদকঃ মঈন উদ্দীন আহমদ শিবলী

প্ল্যাটফর্ম কনট্রিবিউটর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

দেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত।

Tue Oct 22 , 2024
মঙ্গলবার, ২২অক্টোবর, ২০২৪ বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমানহারে বেড়ে চলছে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা। সর্বশেষ ‘বাংলাদেশ এনসিডি স্টেপস সার্ভে- ২০২২’ অনুযায়ী বর্তমানে দেশে প্রতি চারজনে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত। অর্থাৎ, ২৫শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক উচ্চরক্তচাপে আক্রান্ত! যা পূর্বে ছিল প্রতি পাঁচজনে একজন বা ২০শতাংশ। উচ্চ রক্তচাপের বিদ্যমান প্রকোপ কার্যকরভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে তৃণমূল […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo