রবিবার, ৩১ মে, ২০২০
ডা. মুক্তা সারোয়ার
এম আবদুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, দিনাজপুর
গতবছর শেষের দিকে ভিয়েতনামে গিয়েছিলাম। দুইটা জিনিস অবাক করার মতো ছিলো।
একঃ সবাই স্কুটারে অভ্যস্ত।
দুইঃ অনেকের মুখে মাস্ক।
স্কুটার না হয় বুঝলাম, কিন্তু এই মাস্কের ব্যাপারটা খোলাসা হয় নি। গাইড বললো, শহরের দূষিত আবহাওয়া এবং সার্স এর পর থেকেই তারা মাস্ক ব্যবহারে অভ্যস্ত। এর সুফল এখন তারা পাচ্ছে।
মাস্ক ব্যবহারকারী দেশগুলো চমৎকারভাবে করোনাকে নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
তাইওয়ান তো লকডাউনই করেনি। বিপুল পরিমাণে RT-PCR করে রোগীদের আইসোলেশন এবং সব্বাইকে বাধ্যতামূলক মাস্ক পরিয়েছে তারা। আজ তাদের দেশে মাত্র কয়েকশত মানুষ করোনায় আক্রান্ত এবং মাত্র সাতজনের মৃত্যু।
ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কিমবার্লি প্রথার আধুনিক পদ্ধতিতে দেখিয়েছেন যে করোনা ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমে ভেসে অন্যকে আক্রান্ত করে। এ মাসের ২৬ তারিখে ড. এন্থনী ফসি এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “যখন আক্রান্ত কেউ কথা বলে, তাতে যে পরিমাণ droplet এবং aerosal বেরিয়ে আসে তা ভয়ংকর।”
প্রথম দিকে ধারণা ছিলো, ভাইরাসটি droplet এর সঙ্গে নিচে পড়ে যায়। আসলে aerosol মাত্র কয়েক মাইক্রন হওয়ায় তা মুহুর্তেই বাষ্পীভূত হয়ে যায়। রয়ে যায় শুধু ভাইরাস ভাসমান অবস্থায়। এভাবে সে কয়েকঘন্টা পর্যন্ত ভেসে থাকতে পারে। আর এভাবেই করোনা ভাইরাস ছড়াচ্ছে।
তাই মাস্ক পরার কোন বিকল্প নেই। জনগণকে মাস্ক পরানো কঠিন। এজন্য সমাজের সচেতন সমাজকে এগিয়ে আাসতে হবে। আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে লকডাউন তুলে নিলেও জনগণের কাছেই রয়েছে করোনা নিয়ন্ত্রণের চাবিকাঠি। সবাইকে মাস্ক পরতে উৎসাহ দিতে হবে। সবাইকে বুঝাতে হবে,
‘আপনার মৃত্যু সবার কাছে একটি সংখ্যা হলেও,
আপনার পরিবারের কাছে আপনি একটি পৃথিবী।’