বাংলাদেশ আর্মি মেডিকেল কোরের একটা বিস্ময়কর ইতিহাস আছে। এই কোর স্বাধীনতা যুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মধ্যে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করা কোর।
১৪ জন অফিসার সহ সর্বমোট ১৩৮ জন শহীদ হন এই কোর থেকে যা সেনাবাহিনীর অন্যান্য কোরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
খেতাব প্রাপ্ত নারী মুক্তিযোদ্ধা ক্যাপ্টেন সিতারা বেগম স্যার এই কোরেরই এক জন সম্মানিত অফিসার।
এছাড়াও এই কোরের আরো বেশ কয়েক জন খেতাব প্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা।
এই কোরের ৪০ ফিল্ড এম্বুলেন্স ছিলো বাঙালী কমান্ডিং অফিসার পরিচালিত, বাঙালী অফিসার ও সৈন্যদের নিয়ে গঠিত।
কুমিল্লা সেনানিবাসে এই ইউনিটটি আত্মসমর্পণ না করে শক্তিশালী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অসম এক সম্মুখ যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে এবং শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে লড়াই করে প্রতিটি সদস্য শাহাদাত বরণ করেন।
সিও চাইলেই পালিয়ে গিয়ে নিজের জীবন রক্ষা করতে পারতেন। কিন্তু এই অসীম সাহসী আর দেশপ্রেমিক চিকিৎসক লেফটেন্যান্ট কর্ণেল নুরুল আবসার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর স্যার (ডি এম সি, কে-০৬) তাঁর অধীনস্থদের রেখে পালিয়ে যান নি। তাঁর অধীনস্হরাও ভাতৃত্ববোধ আর দেশপ্রেমের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করেন।
৪০ ফিল্ড এম্বুলেন্সএর জায়গাতে এখন স্বাধীন বাংলাদেশের ৩১ ফিল্ড এম্বুলেন্স সেই ক্ষতের চিহ্ন বুকে ধারণ করে দাঁড়িয়ে আছে। এখনো কামানের শেল, বুলেটের চিহ্ন ৩১ ফিল্ডের বিভিন্ন জায়গায় লেগে আছে সেই সব সামরিক চিকিৎসক আর তাঁদের সহকারী সেনাদের অপরিসীম ত্যাগের সাক্ষী হয়ে।
মূল লেখক
মোঃ হুমায়ুন কবির নাহিদ
স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ, সেশন ০৫-০৬
এস এস ৩৪