(মেডিক্যাল ও ডেন্টাল সাইন্সে) জাপানে উচ্চ শিক্ষা

পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে  বৈদেশিক ছাত্রছাত্রীদের প্রায় ৯.৫ শতাংশই জাপানে অধ্যয়নরত জাপানে উচ্চ শিক্ষা গ্রহনের এই ব্যাপক চাহিদার কারণ হচ্ছে জাপানে ছাত্রছাত্রীরা যুগোপযোগী সর্বাধুনিক প্রযুক্তি  ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে মেডিসিন, সাহিত্য থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রশাসন যেকোন বিষয়েই জাপানী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশুনার বিস্তৃত সুযোগ রয়েছে। তাই অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ থেকেও প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রী জাপানে মেডিক্যাল সাইন্সে পড়াশুনা করতে যাচ্ছে।

কোর্সের মেয়াদ:

  • মেডিসিন, ডেন্টিস্ট্রি ও ভেটেরেনারী সায়েন্সের ক্ষেত্রে এর মেয়াদ ৪ বৎসর হয়ে থাকে।
  • জাপানে মেডিক্যাল সাইন্স/ডেন্টাল সাইন্স এর একমাত্র একাডেমিক স্পেশালিটি ডিগ্রী হচ্ছে পি.এইচ.ডি। সেটি বেসিক অথবা ক্লিনিক্যাল উভয় সাবজেক্ট এর জন্নে প্রযোজ্য।
  • সেজন্নে জাপানে আবেদনের ক্ষেত্রে প্রথম শর্ত হচ্ছে অতিরিক্ত ১ বছর শিক্ষা জীবন। সেটি এম.পি.এইচ হতে পারে। ইন্টার্ন কে শিক্ষা জীবন হিসেবে এরা কাউন্ট করে না। সুতরাং মোট শিক্ষা জীবন ১৮ হতে হবে। যার মধ্যে মেডিক্যাল/ ডেন্টাল কলেজ ছাড়া সর্বমোট ১২ বছর কাউন্ট করবে।
শিক্ষাবর্ষ:
  • জাপানী উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে শিক্ষাবর্ষ শুরু হয় এপ্রিল মাস থেকে যা পরবর্তী মার্চে শেষ হয়। সাধারনত ১টি শিক্ষাবর্ষ ২টি সেমিস্টারে বিভক্ত থাকে- এপ্রিল-সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবর থেকে মার্চ।

যেসব বিষয়ে পড়ানো হয়:

জাপানী বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অসংখ্য বিষয়ে পাঠদান করা হয়। তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো হচ্ছে:
  • মেডিসিন
  • ডেন্টিস্ট্রি
  • ভেটেরেনারী সায়েন্স
  • বায়োকেমিষ্ট্রি
আবেদন প্রক্রিয়া:
  • প্রথমত: আগ্রহী শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বরাবর আবেদন করতে হয় এজন্য তাকে তার পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বেছে নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে আবেদন প্রক্রিয়া এবং ন্যূনতম যোগ্যতা সম্পর্কিত তথ্যগুলো পাওয়া যাবে। সময়মতো ক্লাস শুরু করতে হলে কোর্স শুরু হওয়ার অন্তত ২/৩ মাস পূর্বে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীগন ঢাকাস্থ জাপান অ্যাম্বেসীর সংশ্লিষ্ট শাখায় যোগাযোগ করে স্টাডি পারমিটের আবেদন করবেন। আপনার আবেদন ফর্ম এবং শিক্ষা পরিকল্পনা হতে হবে নিখুঁত। সাথে পাব্লিকেশন এবং কিছু অভিজ্ঞতা আলাদা মাত্রা যোগ করবে। আর যদি যৌথভাবে কোন জাপানীজ প্রফেসরের সাথে কোন প্রোজেক্ট অথবা জয়েন্ট স্টাডিতে অংশগ্রহন করার অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে সেটিও গুরত্তের সাথে বিবেচনা করা হয়।
জাপানের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো:
জাপান বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে বড় অর্থনৈতিক শক্তি। তাই সারা জাপান জুড়ে তারা অসংখ্য প্রথম  শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে। এখানে জাপানের শীর্ষস্থানীয় ৩০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা দেয়া হলো:
  • ইউনিভার্সিটি অব টোকিও
  • ওসাকা ইউনিভার্সিটি
  • টোকিও ইউনিভার্সিটি
  • হিরোশিমা ইউনিভার্সিটি
  • ওকায়ামা ইউনিভার্সিটি
  • টোকিও ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স
  • টোকিও মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল ইউনিভার্সিটি
  • ওসাকা সিটি ইউনিভার্সিটি
  • তোকুশিমা ইউনিভার্সিটি
  • ইয়োকো হামা ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি
প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:
  • পাসপোর্ট (ন্যূনতম ৬ মাস মেয়াদ আছে এমন)
  • সবগুলো একাডেমিক ট্রান্সক্রিপ্ট, বি.এম.ডি.সি সার্টিফিকেট, ল্যাঙ্গুয়েজ সার্টিফিকেট, রেকমেন্ডেশন লেটার(৩টি), জব এক্সপেরিয়েন্স সার্টিফিকেট, স্টাডি প্রপোজাল, বার্থ সার্টিফিকেট, মুল সার্টিফিকেট, টেস্টিমোনিয়াল, পাবলিকেশন, ফটো আইডেন্টিটি, কমপ্লিট সিভি।

টিউশন ফি (বাৎসরিক)

এখানে জীবনযাত্রা এবং পড়ালেখার খরচ যে কোন দেশের চাইতে অনেক বেশি। তাই সাধারনত সেলফ ফান্ডিং এর চিন্তা শুরুতেই বাদ। পার্ট-টাইম কাজ করে পড়ালেখার খরচ যোগানোর চিন্তাও বাদ, কারন আপনি আপনার পড়ালেখার বাইরে জব করার সময়ই পাবেন না। এখন ফান্ডিং পাওয়া যাবে ২ টি উপায়ে। প্রাইভেট ও গভর্নমেন্ট ফান্ডিং। এখানের প্রোফেসররা খুবই ক্ষমতাশালী। তারা চাইলে ফান্ডিং যোগার করে দিতে পারেন। সেজন্নে মুল উপায় হচ্ছে তাদের মেইল করা বা অন্য কোনভাবে পরিচয় হওয়া। কারন জাপানীরা পারস্পরিক সম্পর্ককে খুবই গুরুত্ত দেয়। গভর্নমেন্ট স্কলারশিপ এর জন্নে ২ ভাবে আবেদন করা যায়। বাংলাদেশে জাপানীজ এমব্যাসির মাধ্যমে অথবা কোন জাপানীজ ইউনিভার্সিটির মাধ্যমে। যার মধ্যে ২য় টি সহজতর।
বাসস্থান সুবিধা ও খরচ : জাপানে বিদেশী ছাত্রছাত্রীরা ৪ ধরনের বাসস্থানে বসবাস করতে পারে। এগুলো হচ্ছে-
  • স্টুডেন্ট ডরমিটরী
  • স্থানীয় সরকারী সংস্থা কর্তৃক বরাদ্দকৃত পাবলিক হাউজিং
  • জাপানীজ বিভিন্ন সংস্থার স্টাফ ডরমিটরী
  • ব্যক্তিগত ভাড়া বাসা
এলাকাভেদে বাসস্থানের খরচে পার্থক্য দেখা যায়। যেমন- টোকিওতে একজন ছাত্রের বাসস্থান খরচ মাসিক প্রায় ১৫৮০০০ ইয়েন আর শিকোকুতে এটা প্রায় ১১৭০০০ ইয়েন।
উপরোক্ত প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জানা থাকলে একজন আগ্রহী শিক্ষার্থী সহজেই উচ্চশিক্ষার জন্য চেষ্টা করতে পারে।
বিঃ দ্রঃ
আপনি Monbukagakusho বৃত্তি নিয়ে পরবর্তী 2015 অক্টোবর থেকে জাপানে এম এস এবং / অথবা পিএইচডি করতে আগ্রহী হন, তাহলে জাপানি বিশ্ববিদ্যালয় এর বিভিন্ন অধ্যাপক কে ইমেল করতে পারে. এটি আপনার মেইল প্রতিক্রিয়া গুরুত্বপূর্ণ সময়. পরবর্তী মাস থেকে হতে পারে, কারণ তারা আগামী বছরের জন্য ছাত্র প্রস্তুত করবে.
1 একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিন বা চার অধ্যাপক এর বেশি ইমেইল করবেন না.
2 বিষয় সম্পর্কিত অধ্যাপকদের নির্বাচন করুন.
3 মাঝারি মানের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইমেল পাঠান.
4 জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বেশি বৃত্তি দেয়. অতএব, প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়  গুলতে ইমেল লিখুন
5 আপনি আপনার মেইলে  উল্লেখ করে দিবেন যে আপনি তাদের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরবর্তী  2015 এর  স্কলারশিপ এ আবেদন করতে চান
                                                                                                                    ————————-ডা। ইয়াসিন আরাফাত–

মেডিকেল ডেস্ক

8 thoughts on “(মেডিক্যাল ও ডেন্টাল সাইন্সে) জাপানে উচ্চ শিক্ষা

  1. (মেডিক্যাল ও ডেন্টাল
    সাইন্সে) জাপানে উচ্চ
    শিক্ষা
    October 11, 2014 in Career

    উপরিউক্ত শিরোনামে যে আর্টিকেল লেখা হয়েছে, এখানে লেখক বলেছেন জাপানিজ প্রফেসরদের ইমেইল করতে। আমি কিভাবে প্রফেসরদের ইমেইল নং খুঁজে পাবো? আর এম.পি.এইচ. বলতে কি বুঝায় একটু বুঝিয়ে বলবেন কি? আমরা যারা ডেন্টাল শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাবর্ষ তাহলে ১৬ বছর হয়(ইন্টার্ন এর ১ বছর ছাড়া)। সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি? আর টিউশন ফি কত এ সম্পর্কীয় কথা বিভিন্ন ডেন্টাল ইউনিভার্সিটি ভেদে একটু বিশদভাবে বর্ণনা করলে উপকৃত হবো।

    1. উল্লেখিত ইউনিভার্সিটিগুলোর ওয়েবসাইটে প্রফেসরদের মেইল এড্রেস খুজে পাবেন এছাড়া বিভিন্ন জার্নালে মেইল এইড্রেস পাবেন। ইউনিভার্সিটি অনুসারে একাডেমিঙ্ক ইয়ার এবগ্ন অন্যান্য রিকয়ারমেন্ট আলাদা হতে পারে এটিই ইউনিভার্সিটি ওয়েবসাইটে পরিষ্কারভাবেই লেখা থাকে।

  2. (মেডিক্যাল ও ডেন্টাল
    সাইন্সে) জাপানে উচ্চ
    শিক্ষা
    October 11, 2014 in Career by -ডা। ইয়াসিন আরাফাত

    উপরিউক্ত শিরোনামে যে আর্টিকেল লেখা হয়েছে, এখানে লেখক বলেছেন জাপানিজ প্রফেসরদের ইমেইল করতে। আমি কিভাবে প্রফেসরদের ইমেইল নং খুঁজে পাবো? আর এম.পি.এইচ. বলতে কি বুঝায় একটু বুঝিয়ে বলবেন কি? আমরা যারা ডেন্টাল শিক্ষার্থী তাদের শিক্ষাবর্ষ তাহলে ১৬ বছর হয়(ইন্টার্ন এর ১ বছর ছাড়া)। সেক্ষেত্রে আমাদের করণীয় কি? আর টিউশন ফি কত এ সম্পর্কীয় কথা বিভিন্ন ডেন্টাল ইউনিভার্সিটি ভেদে একটু বিশদভাবে বর্ণনা করলে উপকৃত হবো।

  3. মমিনুর সাহেব,
    জাপানের সব ইউনিভারসিটিতে টিউসশন ফি এক।। ওয়েবসাইট চেক কড়েন। এম পি এইচ মানে mastars in public health. আশা ছিল এই টুকু জানবেন অন্তত!!

    Dr. Monirul Islam
    BDS, MPH ( Nipsom)
    Phd student at Okayama univarsity, Japan

  4. মেডিসিন এর কোন কোন বিষয়গুলো পড়ানো হয় এখানে?আর কোর্স কি বিএমডিসি এফিলিয়েটেড?
    কিছু ভার্সিটির নাম বললে খুব উপকার হত।

  5. এম,বি,বি,এস / বি,ডি,এস ছাড়া অন্যান্য অরটারনেটিভ মেডিকেল ডিগ্রিধারী যেমন বি,ইউ,এম,এস/ বি,এ,এম,এস রা কি আবেদন করতে পারবে??

    1. এম,বি,বি,এস / বি,ডি,এস ছাড়া অন্যান্য অলটারনেটিভ মেডিকেল ডিগ্রিধারী যেমন বি,ইউ,এম,এস/ বি,এ,এম,এস রা কি আবেদন করতে পারবে??জানালে উপকৃত হতাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

ইবোলা ভাইরাস প্রতিরোধে বিমানবন্দরে মনিটরিং

Mon Oct 13 , 2014
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে ইবোলা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় দেশের বিমানবন্দরগুলোেত মনিটরিং কার্যক্রম জোরালো করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা আগামী কয়েক মাস অব্যাহত থাকবে। এব্যাপারে দেশবাসীকে আতঙ্কিত না হয়ে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, কোনোভাবেই যেন এই ভাইরাস দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সরকার সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় আছে। গতকাল সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইবোলা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলায় জরুরি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo