২৩ মার্চ, ২০২০ ইং
বর্তমান সময়ে করোনা ভাইরাস এক মহা আতঙ্কের নাম। বিশ্বব্যপী এর সংক্রমণ মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। সংশয়ের বাইরে নেই বাংলাদেশেও, এই ভাইরাসের প্রভাব এখন ক্রমশ ঊর্ধ্বগামী।
এমত অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত স্ত্রী-সন্তানের সাথে সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে সেখানে পাড়ি জমিয়েছেন বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান।কিন্তু সেখানে গিয়েও পরিবারের সাথে দেখা করার সুযোগ হয়নি সাকিবের। বিমানবন্দর থেকে সরাসরি গিয়ে উঠেছেন একটি হোটেলে। বর্তমান সঙ্কটময় পরিস্থিতির কারণেই সতর্কতাস্বরূপ করোনা বিষয়ক নিয়মকানুন পালনের অংশ হিসেবে নিজেকে রেখেছেন সেলফ কোয়ারেন্টাইনে। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নিজের ভ্যারিফাইড ফেসবুক পেইজ থেকে একটি ভিডিও বার্তায় বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার নিজেই জানিয়েছেন এসব তথ্য।
স্ত্রী-সন্তান ও পরিজনের সঙ্গে এখনই দেখা না করে নিজেকে ১৪ দিন স্বেচ্ছায় নির্বাসনে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া সাকিব তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা শেয়ার করে বলেনঃ
“আমি মাত্রই যুক্তরাষ্ট্র এসে পৌঁছলাম। যদিও প্লেনে সবসময় একটা ভয় কাজ করেছে, একটু হলেও। তার পরও চেষ্টা করেছি, যতটা সম্ভব পরিচ্ছন্ন থাকা যায়, নিজেকে কীভাবে জীবাণুমুক্ত রাখা যায়। যুক্তরাষ্ট্রে এসে আমি সোজা একটি হোটেল রুমে উঠেছি।
ওদেরকে (পরিবারকে) আমি অবগত করেছি যে এখানে থাকব কিছুদিন। যেহেতু ফ্লাই করে এসেছি, একটু হলেও ঝুঁকি আছে। তাই আমি নিজেকে আইসোলেটেড করে রেখেছি। আমার বাচ্চার সঙ্গেও দেখা করিনি। যদিও এটা আমার জন্য কষ্টের, তার পরও মনে হয়েছে, সামান্য এই ত্যাগটুকু করতে পারলে অনেক দূর এগোতে পারব।”
প্রবাসী যারা বাংলাদেশে এসেছেন তাদের কোয়ারেন্টাইন নিয়ম মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে সাকিব বলেনঃ
“যদি কেউ বিদেশ থেকে ফিরে থাকেন, তাহলে অবশ্যই নিজেকে ঘরে রাখতে হবে। আত্মীয়-স্বজন ও বাইরের মানুষ যেন আপনার সঙ্গে এসে দেখা করতে না পারে। ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে, যা খুবই জরুরী।
যারা বিদেশ থেকে এসেছেন, তাদের সবারই ছুটি কম থাকে। তারা চান আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করতে, ঘোরাফেরা করতে, আড্ডা দিতে কিংবা কোনো অনুষ্ঠানে একত্রিত হতে। যেহেতু সময় আমাদের অনুকূলে নয়, আমি সবাইকে অনুরোধ করব নিয়মগুলো মেনে চলতে। সামান্য এই ত্যাগ পারে আমাদের পরিবারকে বাঁচিয়ে রাখতে, সুস্থ্য রাখতে, নিজেদেরও সুস্থ্য রাখতে। আশা করি সবাই কথাগুলি শুনবেন ও মেনে চলার চেষ্টা করবেন।”
প্রাণঘাতী সংক্রামক এ ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেওয়া পদক্ষেপ মেনে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সাকিব। তিনি তার বার্তায় সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি বা কাশি দেওয়ার সময় সঠিক শিষ্টাচার মেনে চলার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। চেহারায় কিছুটা ক্লান্তির ছাপ লক্ষ্য করা গেলেও তিনি কথা বলেছেন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে। তিনি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে দেশের মানুষকে প্রাণঘাতি ভাইরাসের বিপক্ষে লড়াইয়ের অনুপ্রেরণা জোগান।
শেষে তিনি কাউকে আতঙ্কিত না হতে বা আতঙ্ক না ছড়ানোর অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, অনেকেই তিন-চার-পাঁচ দিনের খাবার সংগ্রহ করে রাখছেন। আমার ধারণা, খাবারের ঘাটতি কখনোই হবে না ইনশাআল্লাহ। আমরা কেউ না খেয়ে মারা যাব না।
নিজস্ব প্রতিবেদক/ আব্দুল্লাহ আল মারুফ