কিছু রক্তসৈনিকের কথা বলি! মানুষগুলোর মানবসেবা করা সুযোগ হয় চিকিৎসক হবার আগে থেকেই। দুস্থ, পীড়াগ্রস্ত, অসহায়কে রক্ত সরবরাহ করাই এদের কাজ। নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালনে দেশে যে একটি নীরব আন্দোলন তা কয়জনই বা জানি। রক্ত কেনাবেচার মত গর্হিত কাজগুলো বা পেশাদার রক্তদাতাদের নিরুৎসারিত করার পেছনে তাদের অবদান কজনই বা মুখফুটে স্বীকার করি। আমি সন্ধানী, মেডিসিন ক্লাব বা বিভিন্ন মেডিকেল কলেজগুলোর রক্তদানকারী সংগঠনের কথা বলছি।
রক্ত সংগ্রহে কোথায় না যাওয়া হয়। দেখেছি ওদের বিভিন্ন জাতীয় দিবসের ক্যাম্পিং এ সারারাত দুটি চোখ থেকে ঘুম তাড়িয়ে মানুষকে স্বেচ্ছায় রক্তদানে মোটিভেট করতে। গোটাখানেক রক্ত সরবরাহ করায় তৃপ্তির হাসি হাসতে। দেখেছি পহেলা বৈশাখে! পুরো দেশ যখন বর্ণিল, তখনই তাদের ছুটে যেতে দেখেছি বিবর্ণ কিছু মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর তাগিদে ছুটে যেতে। বাংলা নতুন বছর উপভোগ করে রক্তপ্রাপ্তির তৃপ্তিতে।
থ্যালাসেমিয়া রোগটাকে বোধ হয় ওদের মত করে আর কেউ উপলব্ধি করার ক্ষমতা রাখেন না। অসহায় কিছু মুখগুলো রক্তের আশায় এসে ক্লাবে বসে থাকে, রক্ত নিয়ে যেন আর কটা দিন নিজের আয়ু কিনে নিল।
এ দানটুকুর উপলব্ধি এ স্বার্থত্যাগী রক্তসৈনিকদেরই হয়। সাথে চলে কাউন্সেলিং, লোকগুলো আমাদেরই আপনভাবে। ফ্রি ক্যাম্পিং করা হয় মাঝে মাঝে, বিনামূল্যে ওষুধও সরবরাহ করা হয় মাঝে মাঝে। কই এগুলো তো কখনো কাদের মুখে শুনতে শুনি না। অমুক রা তমুক কাজ করেছে।
বছরে কয়েক হাজার রক্ত সরবরাহ করা হয় একেকটা ইউনিট থেকে তার খবর আমরা কজন রাখি!!
তাদের দেখেছি শীতার্তদের মাঝে ছুটে যেতে, দেখেছি বন্যায় ত্রাণে। বিনামূল্যে রক্তগ্রুপিং-এ।
নতুন কিছু করার স্বপ্ন আমরাই দেখি।
মেডিকেল সেক্টরে এদের মতো উদ্যোমী আর একজনকেও পাবেন না। কি না করতে পারে না। নিজেদের সামর্থ্যের সীমাবদ্ধ সম্পদ নিয়ে তারা যা করতে পারে অন্যকারোর মাঝে তা দেখি নি।
আমাদের চিকিৎসক সমাজ যেন মাঝে মাঝে নিজেদেরই চিনতে পারি না। আগে নিজেদেরকে জানি। এ সংগঠনগুলা মেডিকেল সেক্টরের একেকটা পায়োনিয়ার! এদের কর্মকান্ডকে আরেকটু বেগবান করার সুযোগ করে দেই।একটু ফ্লোর বৃদ্ধি করার সুযোগ করে দেই।
ওদের রক্তে সংগঠন, ওদের রক্তে মানবসেবা।
আত্নার বন্ধনে জয়ী হোক মানবতা।
লিখেছেন: মেহেদী হাসান অনিক
মমেক। ম-৫১