প্ল্যাটফর্ম নিউজ , ২৭ জুন, ২০২০, শনিবার
ডা. মোঃ রিজওয়ানুল করিম
কোভিড-১৯ রোগীর সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন দেশে কঠোর বা শিথিল লকডাউন ব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয়েছে। ব্যক্তিগত সুরক্ষার জন্য আমাদের সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা এবং উপসর্গ দেখা দিলে আইসোলেশন, কোয়ারেন্টাইন ইত্যাদি সামাজিক বিচ্ছিন্নতার পদ্ধতিগুলো দীর্ঘদিন মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সাথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা নিশ্চিত করতে বলা হচ্ছে।
ইতোমধ্যেই এই নতুন সামাজিক ব্যবস্থাপনার কারণে মানুষের মনে দেখা দিয়েছে অবসাদ বা ক্লান্তি। মনোবিশেষজ্ঞদের উপদেশ অনুযায়ী কয়েকটি বিষয় পালন করলে প্রাথমিক পর্যায়ের অবসাদ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।
মহামারীর কারণে সৃষ্ট স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং অর্থনৈতিক অনিরাপত্তা আমাদের সকলের মনের উপরেই অতিরিক্ত চাপ তৈরি করেছে, যা অনেকেরই নিয়মিত ঘুমকে ব্যাহত করছে। মনোবিজ্ঞানীদের মতে অন্য যেকোন সময়ের চাইতেও এই মহামারীর সময়টিতে পর্যাপ্ত ঘুম বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই ঘুমকে অবহেলা করা যাবে না।
কোভিড-১৯ প্রতিরোধের সামাজিক ব্যবস্থাপনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে নির্দয় ব্যবস্থাপনাটি হল শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা। এর আবির্ভাবের প্রথম থেকেই সবচাইতে বেশি প্রচারিত সতর্কবাণী হলো করমর্দন করা যাবে না, কুলাকুলি করা যাবে না, বা এক কথায় অপরের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে হবে।
ইতিবাচক স্পর্শ আমাদের শরীরে ডোপামিন, সেরোটনিন, অক্সিটোসিন নামের রাসায়নিক ও হরমোন নিঃসরণ করে এবং কর্টিসলের নিঃসরণ কমায়, যার ফলে আমরা ইতিবাচক অনুভুতি; যেমনঃ অনুপ্রেরণা, সন্তুষ্টি, নিরাপত্তা, মানসিক চাপমুক্তি ইত্যাদি অনুভুতি বোধ করে থাকি।
দীর্ঘদিন সংস্পর্শ এড়িয়ে চলার বিষয়টি মানুষের মধ্যে যে সমস্যাগুলো তৈরি করতে পারে-
- মানসিক দূরত্ব,
- শিশুর ডেভেলপমেন্ট বাধাগ্রস্ত করবে,
- রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা নষ্ট করে দিবে এবং
- অতিরিক্ত মানসিক চাপ তৈরি করবে।
মনোবিজ্ঞানীরা এর সমাধান হিসেবে জানিয়েছেন-
- নিজের পরিবারের সদস্যদের সাথে নিরাপত্তার বিষয়গুলো বিবেচনা করে হাত মেলানো, হাই ফাইভ করতে পারেন।
- এছাড়াও বাগান করা,
- অবসর সময়ে ছাদে যাওয়া,
- পশু পাখিকে আদর যত্ন করলেও ভালো অনুভুত হবে।
যারা একা থাকেন এবং কোন পোষ্য নেই তাদের জন্য-
- নিয়মিত ঘুম, শরীরর্চচা, পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা,
- সামাজিক যোগাযোগ বজায় রাখা,
- বাগান করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ড তাদের মানসিক চাপ কমিয়ে রাখতে সাহায্য করবে।
উপরোক্ত বিষয়গুলো মেনে চলতে পারলে এবং স্বাস্থ্য বিধি মেনে চললে, সামাজিক দূরত্বের ফলে সৃষ্ট মানসিক অবসাদ কিছুটা হলেও কাটিয়ে উঠা সম্ভব।