প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ০৩ আগস্ট, ২০২২, বুধবার
প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে সকল আসামীদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন, সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
গতকাল ২ আগস্ট, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সিওমেক ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মো. সাইফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক ডা. আহমেদ মুনতাকিম চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান।
প্রসঙ্গগত, গত ৩০ জুলাই সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একজন নারী ইন্টার্নের শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত। এর প্রতিবাদ করায় ক্ষিপ্ত হয়ে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা ১ আগস্ট সন্ধ্যার পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক ইন্টার্ন চিকিৎসক ও মেডিকেল শিক্ষার্থীদের উপর অতর্কিত হামলা করে ও হত্যাচেষ্টা চালায়। একইসাথে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা অস্ত্রের মুখে একজন নারী ইন্টার্নকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি প্রদান করে। সিসিটিভি ফুটেজে স্পষ্ট আলামত পাবার পরও ২৪ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও পুলিশ চিহ্নিত সাত আসামীর কাউকেই গ্রেফতার করতে পারে নি। পরবর্তীতে দুই শিক্ষার্থীর ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার রাত থেকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ওসমানী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। রাতেই কর্মবিরতির ডাক দিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেন এই হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।

পরে প্রশাসনের আশ্বাসের প্রেক্ষিতে সোমবার ভোর রাত ৩টায় পরদিন দুপুর ২টা পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা।
নির্ধারিত সময়সীমা শেষে মঙ্গলবার বেলা আড়াইটায় কলেজের মিলনায়তনে কলেজ ও হাসপাতাল প্রশাসন, পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষার্থীরা।
বৈঠকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় ইতোমধ্যে দুজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের আটকের চেষ্টা চলছে। কলেজ ও হাসপাতহাল প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি মামলা করা হয়েছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে প্রশাসনের কর্তারা আন্দোলন থেকে সরে আসার আহ্বান জানান।
এ সময় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ডা. মতিউর রহমান বলেন, হামলাকারী সকল আসামি গ্রেপ্তার এবং শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিরাপত্তায় দৃশ্যমান উদ্যোগ নেওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমরা ধর্মঘট চালিয়ে যাব। সেবা দিতে এসে আমরা হামলা ও হয়রানির শিকার হতে রাজি নই। তারা বলেন, প্রধান অভিযুক্তসহ অন্যদের আড়াল করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে দাবি পুরণ না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানিয়েছেন, মেডিকেল কলেজের পঞ্চম বর্ষের শিক্ষার্থী অমিত হাসান সানি।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, আমরা ইন্টার্ন চিকিৎসক ও শিক্ষার্থীদের সব দাবির সঙ্গে একমত। তাদের দাবি পুরণে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু করেছি। তবে সব দাবি পুরণে কিছুটা সময় লাগবে। আমরা তাদের কাছে এই সময়টুকু চেয়েছি।এখনও আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
এদিকে মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ। তিনি বলেন, কলেজ প্রশাসনের দায়ের করা মোহিদ হাসান রাব্বি ও এহসান আহম্মদ এই দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।