স্কয়ার হাসপাতালে মোঃ নাসিরুদ্দিন নামের একজন লিভার ট্রান্সপ্ল্যান্টের রোগী ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে মৃত্যু শয্যায় আছেন বলে ফেসবুকে একটি ভিডিও বার্তায় অভিযোগ করেছেন তার মেয়ে শামীমা আহমেদ।
রোগী নাসিরুদ্দিনের মেয়ে শামিমা আহমেদ স্কয়ার হাসপাতালে অনিয়ম, অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলেন। তিনি বলেন, ‘ভুল চিকিৎসার’ কারণে তার বাবা বর্তমানে মৃত্যুশয্যায়।
কিন্তু বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুখ খুলেছেন স্কয়ার হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিভাগের বিশেষজ্ঞ ডা. শুভদীপ চন্দ।
শুভদীপ চন্দ বলেন, ‘উনি লিভার ট্রান্সপ্লান্টের রোগী। গতবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে আসেন। ক্রিয়েটিনিন পাঁচের উপর ও ফুসফুসে পানি জমায় কনসালটেন্ট সাহেব ডায়ালাইসিস করতে বলেন। তারপর মাথাব্যাথা ও কিছুটা ডিজওরিয়েন্টেড সমস্যার জন্য একজন নিউরোলজিস্টকে রেফার করেন৷
তিনি এসে ব্রেনের এমআরআই করতে বলেন। রোগীর স্ত্রী এমআরআই করাবেন না বলে জানান। এটি ডকুমেন্টেশন করা হয় এবং ছুটির কাগজে পেশেন্ট পার্টির অনিচ্ছার কথা লিখেও দেয়া হয়। ’
তিনি বলেন, এরপরে আবার স্কয়ারে আনার পর রোগীর স্বজনেরা ইমেজিং করাতে রাজি হন। সেখানে দেখা যায়, ব্রেনে বড় রক্ত জমাটবাধা স্ট্রোক।
তিনি বলেন, ‘উনি (রোগী) এখন স্কয়ারেই ভর্তি আছেন। ভাবছি, এটা কত সহজ—আলোড়ন সৃষ্টি করা। পুরো ভিডিওতে তিনি (রোগীর মেয়ে) দায়ী করলেন ডায়েলাইসিসকে। এটা কী রোগীর স্বজনদের সিদ্ধান্ত, ডায়েলাইসিস লাগবে কিনা! তিনি (রোগীর মেয়ে) বারবার বলছিলেন, ব্রেন সিটিস্ক্যান কেন করা হলো না; অথচ তাদের অনিচ্ছার কারণেই তা করা হয়নি। সেটা স্বাক্ষরসহ ডকুমেন্ট আছে। তিনি বোঝাতে চাচ্ছিলেন, ডায়েলাইসিসের জন্যই স্ট্রোক হয়েছে। ডায়েলাইসিস দিয়ে কি ইস্কেমিক স্ট্রোক ঘটিয়ে ফেলা সম্ভব?’
তিনি বলেন, আজ তিনি লিখছেন, কাল হয়তো তার চাকরি থাকবে না। আর এ কারণে প্রকৃত সত্যগুলো কখনো প্রকাশ পায় না। কিন্তু এখানে একজন জ্যেষ্ঠ চিকিৎসকের সুনাম জড়িত। চুপ করে থাকাটা অন্যায়।
স্কয়ার হাসপাতালের কার্ডিওলোজি বিশেষজ্ঞ আরও বলেন, ‘একজন ডাক্তারের ক্যারিয়ারে প্রশ্নবোধক চিহ্ন ঝুলিয়ে দেয়া খুব সহজ। একইভাবে একজন ডাক্তারের ক্যারিয়ার বিল্ডআপ করা খুব কঠিন। আবেগ দিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্তে পৌছানো খুব সহজ, যুক্তি দিয়ে সেটি প্রতিষ্ঠিত করা কঠিন। হুট করে একজনকে শত্রু বানিয়ে দেয়া খুব সহজ। তবে সঠিক শত্রুকে চিহ্নিত করা খুব কঠিন। খুব সহজ এক ভিডিও ভাইরাল করা, খুব কঠিন সে ভাইরাসকে অসুখ বানানো থেকে বিরত রাখা।’
নিউজ/বাংলাদেশটুডে