প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২০ জুন ২০২০, শনিবার
ডা. রাশেদুল হাসান
ইনডোর মেডিকেল অফিসার
মেডিসিন ডিপার্টমেন্ট,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
রোগীদের নিয়ে কাজ করতে করতে অনেক অভিজ্ঞতাই হয় যা কখনও বলা হয়ে উঠে না, কিছু কথা থেকে যায় অন্তরালে। গত দুই বছর আগের কথা, মুন্সীগঞ্জ জেলার এক রোগী একদিন আমার কাছে আসলেন। অভিযোগ করলেন, তার পেটে চাকা অনুভব হয়, আর খেতে না পারায় তিনি অনেক শুকিয়ে গিয়েছেন। ক্লিনিকাল পরীক্ষা করার পর ম্যালিগনেন্সি সন্দেহ হয়েছিল।
চিকিৎসা কোথায় করাবেন তা রোগীর পরিবার বুঝে উঠতে পারছিল না। আবার তাদের অবস্থাও তেমন ভাল না। ঢাকা মেডিকেল কলেজে আমি আমার ইউনিটেই তাকে ভর্তির ব্যবস্থা করলাম, প্রয়োজনীয় সকল টেস্ট করার পর কার্সিনোমা স্টোমাক ধরা পড়েছিল। যথাযথ রেফারেল পাঠিয়ে দিয়েছিলাম। এরপর আর কোন খোঁজ পাইনি রোগীর।
কয়েকদিন আগে সেই রোগীর বোন আমাকে খুঁজে বের করলেন। তিনি বললেন,
“স্যার আপনাকে অনেক খুঁজেছি। আমার বোন বলে গিয়েছে, সে মারা যাওয়ার পর যাতে আপনাকে এসে বলে যাই; স্যার আপনি তার জন্য অনেক কিছু করেছেন। ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।”
দুই বছর আগেই রোগীটি মারা যায়, এই দুই বছর শুধু এই দুইটি লাইন বলার জন্য তিনি আমাকে খুঁজেছেন কথাটি শোনার পরই হঠাৎ চোখ ভিজে উঠলো। পরক্ষণেই থামিয়ে নিলাম, মেয়েটি বুঝে ফেলল নাতো আবার! পরিশেষে একটি কথাই বলব,
“একদল সন্ত্রাসীর জন্য সবাইকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাবেন না।”