বুধবার, ০৯ অক্টোবর, ২০২৪
রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালকে রোগীবান্ধব হাসপাতাল করার আহ্বান জানিয়েছেন হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংগঠন ইন্টার্ন কো-অর্ডিনেশন কমিটির সদস্যরা।
গত রবিবার (৬ অক্টোবর) সংগঠনটির সদস্যদের পক্ষ থেকে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘আপনার সুযোগ্য পরিচালনায় স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালকে একটি রোগীবান্ধব হাসপাতালে রুপান্তর করতে নিম্নোক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের ব্যাপারে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আপনার সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছে।’
উক্ত চিঠিতে রোগীবান্ধব হাসপাতাল করার জন্য ৫টি পদক্ষেপ নেয়ার আর্জি জানানো হয়েছে। পদক্ষেপগুলো হল–
১. ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট অনলাইনকরণঃ আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ‘ইনমাস (INMAS), মিটফোর্ড’ রোগীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে তাদের সমস্ত ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট অনলাইনকরণ করেছে। যেখানে একজন রোগী প্রদত্ত আইডি ব্যবহার করে ইনমাস, মিটফোর্ড ওয়েবসাইট থেকে তার রিপোর্ট ডাউনলোড করতে পারে। অপরদিকে মিটফোর্ড হাসপাতালে একটি রিপোর্ট পেতে একজন রোগীকে যথেষ্ট ভোগান্তির শিকার হতে হয়। প্রতিদিন রিপোর্ট হলো কিনা বারবার সে ব্যাপারে খোঁজ নেয়া, রিপোর্ট পাওয়ার জন্য লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করা, রিপোর্ট হারিয়ে যাওয়া, ক্ষেত্রবিশেষে আগে রিপোর্ট পাওয়ার জন্য আর্থিক লেনদেন এর ব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া যায়। তাই সব রিপোর্ট অনলাইনকরণ সম্ভব না হলেও শুরুতে বেসিক ইনভেস্টিগেশন রিপোর্ট (CBC with ESR, S. Creatinine, S. Electrolyte Dengue NS1 Ag, Urine R/E ) ও রেডিওলজি রিপোর্টসমূহ (CT scan, MRI) অনলাইনকরণ করা হলে রোগীরা এসব ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে। একইসাথে রোগীদের নিকট দ্রুত রিপোর্ট ডেলিভারি দেয়া সম্ভব হবে এবং দ্রুত রিপোর্ট পাওয়ার জন্য বাইরে ইনভেস্টিগেশন পাঠানোর প্রবণতা কমে যাবে আশা করি।
২. রেডিওলজি বিভাগে রেডিওলজি ইনভেস্টিগেশনের টাকা জমা দেয়ার জন্য আলাদা কাউন্টার স্থাপন করতে হবে।
৩. প্রতিটি ওয়ার্ডে জরুরি ভিত্তিতে ইসিজি করার জন্য পোর্টেবল ইসিজি ও তা পরিচালনার জন্য সার্বক্ষণিক লোকবল করতে হবে। মুমূর্ষ রোগীদের জরুরী ইসিজি দেখা বা মৃত রোগীর ডেথ ডিক্লারেশনের জন্য কার্ডিওলজি বিভাগে পাঠাতে হয় যেটা আসলে অমানবিক ও দ্রুত চিকিৎসা সেবা প্রদানের প্রতিবন্ধক।
৪. স্যাম্পল সংগ্রহের জন্য প্রতিটি ভবনের নিচে আলাদা আলাদা স্যাম্পল কাউন্টার স্থাপন করতে হবে। এতে স্যাম্পল দেয়ার জন্য আলাদা ভবনে যাওয়া ও লম্বা লাইলে দাঁড়ানোর ভোগান্তি হ্রাস পাবে।
৫. বহির্বিভাগের টিকেট অনলাইনে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে রোগীরা আগের দিন বা হাসপাতালে আসার আগে অনলাইনে টিকেট কাটতে পারবে। পরবর্তীতে কোন বিভাগে দেখাবে তার জন্য আলাদা আলাদা কয়েকটা হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা যাতে সমস্যার কথা বলে কোন রুমে যেতে হবে, এটা সহজেই জেনে নিতে পারবে। এতে রোগীরা লম্বা লাইনে দাঁড়ানোর ভোগান্তি থেকে অনেকটাই রেহাই পাবে।
‘আপনার যথাযোগ্য পরিচালনায় মিটফোর্ড হাসপাতাল অধিকতর রোগীবান্ধব হাসপাতালে পরিণত হবে আমরা এটা বিশ্বাস করি ও আশা রাখি। অতএব মহোদয়ের নিকট আর্জি উক্ত ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহনে যেন আপনার মর্জি হয়’, চিঠির শেষে যুক্ত করা হয়।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক: মঈন উদ্দিন আহমদ শিবলী