২৬, অগাস্ট, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর সকালের ইমার্জেন্সিতে ডক্টর চেয়ারে বসে উচ্চস্বরে চিল্লাপাল্লা করছিলেন তরুণ মল্লিক! পেশায় একজন ওষুধ বিক্রেতা। হাসপাতালের সামনেই তার ওষুধের দোকান। পেশেন্ট এটেন্ড করতে অসুবিধা হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক কাওসার উদ্দিন তাকে চেয়ার ছেড়ে হাসপাতালের বাইরে গিয়ে কথা বলতে এবং চিৎকার করা যাবে না বললে,
উনি বলেন, ‘কি! আমি বাইরে যাবো?’
– অবশ্যই যাবেন।
উত্তরে, ‘এই হাসপাতালের জমি আমাদের!’
– তাহলে সরকারকে বলেন, এই হাসপাতাল আপনাদের, আপনারাই চিকিৎসা দিবেন, ডাক্তার দরকার নাই, আমরা চলে যাই।
একই দিন সন্ধ্যা ৬ টায়, তিন দিনের এক জ্বরের রোগীর সাথে আবার আসে তরুণ মল্লিক। স্যাকমো রোগী দেখে নর্মাল পেলেও ডেংগুর টেস্ট করতে দিয়েছিলেন। এটা ডাক্তারের এটেন্ড করার মত জরুরী রোগী নাহলেও তরুণ মল্লিকের অকথ্য ভাষার ব্যবহারে স্যাকমো দায়িত্বরত ডাক্তার কাওসার উদ্দিনকে ফোন দিতে বাধ্য হন এবং তিনি তখনই চলে আসেন। তরুণ উদ্দিন এর আগে ডাক্তার কাওসারকেও কল দিয়েছিল বেশ কয়বার। এমন আচরণ করতে অভ্যস্ত সে। কেউ কোনদিন প্রতিবাদ করেনি তার এসব ব্যবহারে।
এটাই প্রথয় নয়, তরুণ মল্লিক হাসপাতালে সবসময় ঘোরাঘুরি করেন। আউটডোর, ইনডোর, ইমার্জেন্সি সবখানে তার অবাধ বিচরণ। এক মারামারির রোগীকে কোন কারণ ছাড়াই অনেক দিন ভর্তি থাকার সময়, ছুটি দিয়ে দিলে তরুণ মল্লিক রোগীর লোকের সাথে এসে খবরদারি করেছিল – রোগীকে ছুটি না দেওয়ার জন্য। কখনো তাকে কিছু বলা হলে সে উপজেলার UHFPO স্যারেরও রেফারেন্স দেয়।
এর আগেও এ লোক অনেকের সাথে ঝামেলা বাঁধিয়েছিল, একবার এক ডাক্তারের রুমে ঢুকে তার সামনেই ওষুধ কোম্পানির একজনকে থাপ্পড় মেরেছে। হাসপাতালের সিকিউরিটি গার্ডের সাথে একটা বিষয় নিয়ে মারাত্মক মারামারির পর্যায় হয়েছে ক’দিন আগেই।
ঘটনার পরদিন ২৭ আগস্ট, সকালের রাউন্ডের পর UHFPO স্যারের রুমে ডাকা হয় ডাক্তার কাওসার উদ্দিনকে। তিনি গিয়ে দেখেন স্যারের সামনে তরুন মল্লিক বসা,আর তার পাশের চেয়ারে এক রোগী। তরুন মল্লিক স্যারকে কিছু বলার চেষ্টা করছিলো। এসময় ডাক্তার কাওসার ক্যামেরা অন করে সেটা ভিডিও করার চেষ্টা করলেই, সে চেয়ার ছেড়ে ডাক্তার কাওসারের দিকে তেড়ে আসে, তাঁকে ধাক্কা দেয়। সে সময় ক্যাশিয়ার তরুণ মল্লিককে ধরে ফেলে।
থানার তদন্ত অফিসারের সাথে ডাক্তার কাওসারের এ ব্যাপারে কথা হলে, তিনি তাঁকে সন্ধ্যায় আসলে জিডি করে দিবেন বলে আশ্বাস দেন। এর মাঝেই তরুণ মল্লিক ওষুধ কোম্পানির বেশ কয়েকজনকে হুমকি দিয়েছে, ডাক্তার কাওসারের রুমে যাতে না ঢুকে, আর ঢুকলেই তারা তার আক্রোশে পড়বে।