শুক্রবার, ১২ জুন, ২০২০
ডা. মো. ইমরুল হাসান ওয়ারসি
খাবার তৈরী আর সংরক্ষণ একটা আর্ট কিন্তু তারচেয়েও বেশী সাইন্স প্রযোজ্য। এই সাইন্সটা না বুঝলে কি হয়, সেটা নিয়েই আমার ধারনা তুলে ধরবো।
এই লকডাউনে নিউজ ফিডে অনেকেই দেখছি বিভিন্ন খাবার তৈরী করছেন; অনেকেই এটাকে ব্যবসা হিসেবে নিচ্ছেন। যা ভীষণ ভালো উদ্যোগ। এভাবেই কমিউনিটি হিসেবে আমরা নিরাপদ খাবারে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারবো বলে আশা রাখি।
তবে যে খাবার তৈরীতে রাসায়নিক পরিবর্তন হয় বিশেষ করে এলকোহল, ভিনেগার; সেই সাইন্সটা জানা ভীষণ জরুরী।
এই উপাদানগুলো কেটে এর সাথে ইস্ট মিশিয়ে ২ মাস রেখে দিন; হয়ে গেল…পিন্টারেস্ট/ ইউটিউব দেখেই হয়তো বানিয়ে ফেললেন একটা খাবার। মনে রাখবেন; সাইন্স এভাবে কাজ করে না। বিশেষ করে যখন আপনি খেলছেন ক্ষুদ্র অনুজীব (ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক) নিয়ে। এখানে আপনার পরিবেশ, তাপমাত্রা, কালচার মিডিয়ার ব্যাপক ভূমিকা আছে। আরও পরিস্কার করে বললে, আলো বা অন্ধকারে, ২০ ডিগ্রী বা ৩০ ডিগ্রী তাপে; মধু, চিনি কিংবা গুড় ব্যবহারে; ফলের ভিতরে সুগার কন্টেন্ট, ক্লোরিন যুক্ত ট্যাপের পানি কিংবা টিউবওয়েলের পানির জন্য এইসব অনুজীবের কর্মক্ষমতা ব্যাপক পরিবর্তন হয়। অর্থাৎ এই রিয়েকশনে ১৫ দিনও লাগতে পারে আবার ৩ মাসও লাগতে পারে।
সময় কিংবা বানানোর প্রক্রিয়ায় সামান্য তারতম্য হলে আপনার খাবার উপাদেয় না হয়ে নিষিদ্ধ খাবার; এমনকি জীবন সংহারী বিষেও পরিনত হয়ে যেতে পারে।
নিউজ ফিডে যারা ঘরে বসে ভিনেগার বানাচ্ছেন; খেয়াল করে দেখলাম প্রক্রিয়াগত ভুলের কারণে তাদের অনেকেই ভিনেগারের সাথে নিজের অজান্তেই এলকোহল তৈরী করছেন। আবার যারা ঘরে বসে এলকোহল বানাচ্ছেন তাদের অনেকেই এলকোহলের সাথে প্রচুর ভিনেগার বানাচ্ছেন। ইস্ট কেনার সময় যেন সঠিক ইস্টই কিনেন। তা না হলে বিষক্রিয়ায় প্রানটাই না আবার হারাতে হয়।
মনে রাখবেন, ইসলামের দৃষ্টিতে ভিনেগার খাওয়া সুন্নত। অন্যদিকে এলকোহল খাওয়া হারাম। যারা ভিনেগার বানাচ্ছেন কিংবা বিয়ার; একটু ভুলেই আপনি ঈমান হারাতে পারেন; এমনকি জীবনও!
সুতরাং, খুব খেয়াল রাখতে হবে।