প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৫ জুলাই ২০২০, শনিবার
অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী
প্রত্যেকের বেঁচে থাকার জন্য পানি প্রয়োজন। তবে অত্যধিক ঘাম ঝরা, বমি, তরল মল এসবের জন্য হতে পারে তরল হানি। এতে ফ্লুয়িডের/ তরলের চাহিদা আরও বেড়ে যায়। কিন্তু এক্ষেত্রে কেবল যে পানি হানি হচ্ছে তাই নয়, ইলেকট্রলাইট হানিও হতে পারে। আপনি তৃষ্ণার্ত, অর্থাৎ এর স্পষ্ট লক্ষণ হলো পানিশূন্যতা।
পানিশূন্যতার লক্ষণসমূহ:
১। মুখে বদ গন্ধ পানিশূন্যতার লক্ষণ।
২। শুকনো আর লালচে ত্বক হলো পানিশূন্যতার আরও একটি লক্ষণ।
৩। শরীরে যথেষ্ট পানি হানি হলে শরীর নিজেকে সহজে শীতল করতে পারেনা, আর তাই হিট ইলনেস (উত্তাপজনিত অসুস্থতা) হতে পারে। এজন্য হয় জ্বর এবং শীত শীত অনুভূতি। আর তা থেকে হয় পানিশুন্যতা।
৪। হিট ইলনেস (উত্তাপজনিত অসুস্থতা) থেকে পেশী খিঁচুনিও হয়ে থাকে।
৫। কোন খাবারে অতি আগ্রহ, যেমন, মিষ্টি খেতে খুব আগ্রহ, মানে হলো তৃষ্ণা পেয়েছে।
৬। মাথা ধরা/ মাথা ব্যথা হতে পারে, এক্ষেত্রে পানি পান করা চাই।
কি করে বুঝবেন পানিশুন্যতা?
১। স্কিন টেস্ট: হাতের পৃষ্ঠদেশের ত্বক দু’ আঙ্গুল দিয়ে চিমটি কাটুন, এর পর ছেড়ে দিন। যদি ত্বক দুই-এক সেকেন্ডের মধ্যে আবার পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে আসে তাহলে ঠিক আছে, আর যদি ত্বক পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে আসতে দেরি হয় তাহলে বোঝা যাবে নিরুদন/ পানিশুন্যতা আছে।
২। প্রস্রাব: প্রস্রাবের রঙ যদি হাল্কা খড় রঙ হয় তাহলে ঠিক আছে। আর যদি কমলা রঙ বা হলুদ হয় তাহলে সতর্ক সংকেত। সেক্ষেত্রে সজাগ থাকুন।
বর্তমান গাইড লাইন:
পুরুষ দের জন্য দিনে ৩.৭ লিটার আর নারীদের জন্য ২.৭ লিটার পানি পান করা অত্যাবশ্যক। তরল খাবার, সবজি-ফল আর পানি পানে এ চাহিদা মিটবে।
১। সবসময় হাতের কাছে রাখবেন পানির বোতল।
২। বেশি বেশি পানি পান করুন। মাঝে মাঝে বৈচিত্র্যের জন্য যোগ করতে পারেন ফলের রস বা তাজা ফলের টুকরো।
৩। চিনি ছাড়া চা বা কফি পান করুন।
৪। স্ন্যাক্স খাবেন ফল, রসালো হলে ভাল এবং দধি, যা হেলদি ও স্মুদি।
৫। স্ট্রবেরি, তরমুজ, শশা, লেটুস, পত্রবহুল সবজি, টমেটো, বেল, পেঁপে খাবেন।
৬। খেতে খেতে চুমুকে চুমুকে পানি পান করুন।
বিশেষ দ্রষ্টব্য:
• বয়স্কদের পানি শুন্যতা বেশি হয়।
• ডাইইউরেটিক্স (মূত্রবর্ধক) খেলে হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি পানিশূন্যতা।
• যারা ডিমেনশিয়া (স্মৃতিভ্রংশ) হলে পানি পান করেন না তারা ভুল করেন। তাদের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে।